শোনো কৃষ্ণপ্রসন্ন, আমি মৃত্যু। যদিও এখন অনায়াসে মৃত্যু শব্দটা উচ্চারণ করছি, কিন্তু জেনে রেখো, এই শব্দটা দূরে থাক, ‘ মৃত্যু’ ব্যাপারটা যে আসলে কী? আদিম মানুষ তার বিন্দুবিসর্গও জানতো না। তাড়া মনে করত, এই যে তার প্রিয় মানুষটি হাঁটাচলা করছে না, কথা বলছে না, খাওয়া-দাওয়া করছে না---এটা নিতান্তই একটা সাময়িক...

‘লাইনাস পলিং (১৯০১-১৯৯৪)--– কেউ কেউ বাংলায় পাউলিং-ও বলেন--– পৃথিবীর সর্বকালের সেরা কুড়িজন বিজ্ঞানীর মধ্যে একজন বলে গণ্য। কীসের টানে পরমাণু আর আয়নরা অণু আর কেলাস গেঁথে গেঁথে তোলে সেই রহস্য সমাধান করে বিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন তিনি।  ১৯৫৪-য় এজন্য তিনি রসায়নে নোবেল প্রাইজ পান, যদিও কাজটি তিনি করেছিলেন...

খুব প্রত্যক্ষ ও একনিষ্ঠভাবে, অর্থাৎ অন্য কোনো প্রসঙ্গ বা চিন্তার অবতারণা না করে মণীন্দ্র গুপ্ত বালকবেলার স্মৃতি অবলম্বনে যে কয়েকটি কবিতা লিখেছেন, সেগুলি হল নীল পাথরের আকাশ-এর ‘একখণ্ড জমি, একটি দুপুর ও আমার শৈশব’, বাড়ির কপালে চাঁদ-এর ‘লাল লাল মাদারের ফুল’, ‘ঝাউগাছে বাদুড়দের বাড়ি’ এবং সম্ভবত ‘দুঃখ বালক’। অক্ষয় মালবেরি-র...

২ মে, শনিবার রাত ১১.৪৫ মি ‘দীর্ঘ সময় ধরে আমার শরীরে নিশ্চুপে বাসা বেঁধে থাকা ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে করে এখন আমার শরীর ক্লান্ত ক্লিষ্ট। এই প্রলম্বিত অসুস্থতার পর্ব আমাকে করে তুলেছে বিষণ্ণ। আজকাল শরীরের বিধ্বস্ততা মনের আকাশকেও আচ্ছন্ন করে রাখে। বেশিরভাগ সময়ই নিজের সাধ আর সাধ্যের মধ্যে চলতে থাকে...

...'আমাদের দেশে সত্যিকারের গোলকধাঁধা বা ভুলভুলাইয়া জনপ্রিয় হয় মুঘল আমলে। লখনউ-এর ভুলভুলাইয়াটি বিখ্যাত, এছাড়া বিভিন্ন প্রাসাদের বাগানে ঘন লতাবিতানের সাহায্যেও তৈরি করা হতো।  এগুলি সবই রাজাবাদশার প্রমোদের জন্য।  কিছু প্রাচীন তান্ত্রিক পুঁথিতে গোলকধাঁধার নকশা পাওয়া যায়, যেগুলি ধ্যানের সময় মনঃসংযোগে সাহায্য করত।  এছাড়া পুরাণে মহাকাব্যে গোলকধাঁধার বর্ণনা রয়েছে।  চক্রব্যূহ আদতে...

‘জার্মানির বিখ্যাত প্রোটেস্টান্ট ধর্মতাত্ত্বিক রুডলফ অটো(১৮৬৯-১৯৩৭)১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা শুনে চমৎকৃত হয়েছিলেন এই কারণে যে— আমাদের সামনে কোনো ধর্মতাত্ত্বিক প্রতর্ক উপস্থাপন করতে চাননি তিনি, কিংবা ভারতীয় ধর্মবিশ্বাসের তত্ত্বনির্যাস নিয়ে কোনো বক্তৃতাও দিতে চান নি। চেয়েছিলেন তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বোধকে মেলে ধরতে, আমাদের সেই বোধের অংশভাক করতে। সেই বোধ সম্পূর্ণই তাঁর...

‘২০০৭ সাল, আমরা তখন লোনাকে,  কাঞ্চনজঙ্ঘার উত্তর-পশ্চিম উপত্যকায়। হাড়  হিম  করা  ঠাণ্ডা  হাওয়া। বরফ পড়ার একটা আওয়াজ হয়েই চলেছে। রান্নার জন্য ডেকচিতে জল গরম  হচ্ছে। নর-এর  স্যুপের প্যাকেট কেটে রেখেছি। হঠাৎই ঝুপ করে আওয়াজ হল। পিছনে তাকিয়ে দেখি  এক রাশ বরফ দরজার মাথার ওপর থেকে ঝরে পড়েছে। লাক্‌পা শেরপা আইস-এক্সটা...

ক্‌ফারনাউম : গ্রিক শব্দ, হিব্রু ভাষায় উৎপত্তি।  আদতে দুটি শব্দ, কেফার  ও নাহুম, অর্থাৎ নাহুমের গ্রাম।গ্যালিলি সাগরের উত্তর উপকূলে এক সুপ্রাচীন মাছ-ধরাদের গ্রাম। কোনো এককালে জনসংখ্যা ছিল দেড় হাজারের মতো। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে শুরু হয়ে এগার শতক পর্যন্ত একটানা মানুষের বসবাস ছিল এখানে। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা খনন করে উদ্ধার করেছেন দুটি...

“… মানুষের বিপন্নতা দেখে দেখে আমি একটা জীবনের কথা প্রায়ই ভাবি, সেখানে পৃথিবীতে শুধু সাদা সাদা বহুতল ছায়া পিছলানো বাড়ি। পরিষ্কার রাস্তা ম্যাপের মতো আঁকা। সেইসব বাড়ির কোনোটা আন্তর্জাতিক বইয়ে ঠাসা লাইব্রেরি, কোনোটা খাবার তৈরির জায়গা, কোনোটা বা মানুষের জন্মাবার ও নিরাময়ের হাসপাতাল। আর অন্য বাড়িগুলোতে থাকে মানুষ। তাদের কারুর...

"আমাদের বাড়ির দাওয়ায় বসে আমি রেলগাড়ি দেখতাম। খেলনা রেলগাড়ির মতো ছোট, দূরে মাঠ চিরে হু হু করে ছুটে যায় সেই রেলগাড়ি। ঝকঝকে দুপুর, ঝকঝকে নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, দু-চারটে মাথা খাড়া করে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ, বাবলাগাছ আর বট-পাকুড়ের মধ্যে দিয়ে মৃদু বাঁক নিয়ে চলে যায় সেই রেলগাড়ি।     আমাদের বাড়িটা...