‘লাইনাস পলিং (১৯০১-১৯৯৪)--– কেউ কেউ বাংলায় পাউলিং-ও বলেন--– পৃথিবীর সর্বকালের সেরা কুড়িজন বিজ্ঞানীর মধ্যে একজন বলে গণ্য। কীসের টানে পরমাণু আর আয়নরা অণু আর কেলাস গেঁথে গেঁথে তোলে সেই রহস্য সমাধান করে বিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৫৪-য় এজন্য তিনি রসায়নে নোবেল প্রাইজ পান, যদিও কাজটি তিনি করেছিলেন ১৯৩৯ সালে। নোবেল ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘রাসায়নিক বন্ধনশক্তির চরিত্র এবং জটিল পদার্থসমূহের গঠনে সেই শক্তির ভূমিকা নিয়ে গবেষণার জন্য’ তাঁকে ওই পুরস্কার দেওয়া হল। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ছাত্রদের কাছে নিজের জীবনদর্শন ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন : ‘নিজের মননশক্তি ছাড়া আর কোনো কিছুর ওপরে কখনো বিশ্বাস রেখো না ... সর্বদা নিজে মাথা খাটিয়ে ভাববে’।
আগাগোড়া বস্তুবাদী বিজ্ঞানী পলিং মনের বস্তুবাদী ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করতেন। ফ্রয়েডীয় মনোবিকলন তত্ত্বে তাঁর আস্থা ছিল না। তিনি রাসায়নিক পদার্থ সহযোগে স্কিজোফ্রেনিয়া প্রমুখ কঠিন মনোরোগের বহিঃপ্রকাশ প্রশমিত করার কথা ভেবেছিলেন।
পরে রসায়নের থেকেও মনপ্রাণ দিয়ে সামাজিক প্রতিবাদে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। পারমাণবিক অস্ত্রপরীক্ষা বন্ধ করার দাবিতে, পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রর বিরোধিতায়, রোজেনবার্গদের ন্যায্য বিচারের দাবিতে, ভিয়েতনামে আমেরিকার হামলার প্রতিবাদে নিজের বৈজ্ঞানিক খ্যাতিকেও পণ রাখতে কসুর করেননি। খুব কম অ-কমিউনিস্ট বিজ্ঞানী সম্বন্ধেই একথা বলা যায়।
অতি সাধারণ এক পরিবার থেকে, বহু বাধার পাহাড় ঠেলে বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ মার্গে আরোহণ করেছিলেন তিনি। এখানে তাঁর প্রথম জীবনের সেই প্রশান্ত লড়াইয়ের কথা তাঁর নিজের কথায় পেশ করছি। ক্যালিফোর্নিয়ার প্যালো অ্যাল্টোয় লাইনাস পলিং ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন-এর উপদেষ্টা বারবারা মারিনাচ্চি, যিনি পলিংকে ব্যক্তিগতভাবে জানতেন, তাঁর সম্পাদিত লাইনাস পলিং ইন হিজ ওন ওয়ার্ড্স (টাচস্টোন, নিউ ইয়র্ক, ১৯৯৫) থেকে এই অংশটি অনূদিত।‘…
বইটি সংগ্রহ করতে ক্লিক করুন ।